‘দশম বাপা ফুডপ্রো ইন্টারন্যাশনাল এক্সপো ২০২৫’ কৃষিখাতে বাংলাদেশের প্রক্রিয়াজাত কৃষি পণ্যের সক্ষমতা বিশ্বের সামনে তুলে ধরবে এবং দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠানের বড় বিনিয়োগ পরিবেশ তৈরি করবে।
দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পপ্রতিষ্ঠান প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আহসান খান চৌধুরী এ কথা বলেন।
মেলা উপলক্ষে রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে রাজধানীর পল্টনে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন মেলা কমিটির চেয়ারম্যান আহসান খান চৌধুরী।
আহসান খান চৌধুরী বলেন, বিশ্বের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে নানান প্রযুক্তি বাংলাদেশের দোরগোড়ায় হবে। আমরা চাইলে বিশ্বের উন্নত সব কৃষি প্রক্রিয়াজাত কোম্পানিগুলো মেলায় পাবো। মেলার উদ্যোক্তারা নিজস্ব প্রযুক্তি, পণ্য একে-অপরের সঙ্গে শেয়ার করতে পারবেন।
প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান বলেন, এ মেলায় বড় বিনিয়োগ পরিবেশ সৃষ্টি করবে বলে আশা করি। এছাড়া এখানে বাপার বিভিন্ন সদস্য প্রতিষ্ঠান অংশ নেবে, যারা ভোক্তার জন্য সাশ্রয়ী মূল্যে পণ্য নিয়ে হাজির হবে।
বাপার সভাপতি মো. আবুল হাশেম বলেন, বাপা জন্মলগ্ন থেকেই ফুড প্রসেসিং খাতের উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এ খাতের জন্য এ মেলা গুরুত্বপূর্ণ প্রোগ্রাম। এ আয়োজনের উদ্দেশ্য বাপা ও কৃষি প্রক্রিয়াজাত খাত এগিয়ে নেওয়া।
তিনি বলেন, দেশের কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য রপ্তানি এক বিলিয়ন ডলারের মাইলফলক অতিক্রম করেছে। আমাদের বাংলাদেশি পণ্যের এখন যথেষ্ট চাহিদা বেড়েছে বিদেশে। সম্প্রতি আমরা দুবাইয়ে গালফ ফেয়ারে অংশ নিয়েছি। সেখানে অনেক ভালো সাড়া পেয়েছি। বিদেশিরা জানেন, বাংলাদেশের খাদ্যপণ্যের মান অনেক বেড়েছে। এখন আমাদের খাদ্যপণ্য নিয়ে তাদের কোনো অভিযোগ নেই। যেজন্য আমরা চাই এ দেশে এখন বড় বড় মেলার আয়োজন করতে পারি। এতে যারা অনেক খরচ করে বিদেশে মেলায় যান, তাদের খরচ কমবে। আবার যারা বিদেশে অংশ নিতে পারি না তারাও সুযোগ পাবো। বিদেশিরা এদেশে এসে পণ্য অর্ডার দিয়ে যাবে, সেটা আমাদের জন্য বড় সফলতা।
এ বছর বাপা ফুডপ্রোতে বিদেশি অংশগ্রহণকারী বাড়বে আশা করে আবুল হাশেম বলেন, আমরা প্রতিটি অ্যাম্বাসির মাধ্যমে ওইসব দেশের ব্যবসায়ীদের এ মেলা সম্পর্কে জানিয়েছি। আশা করি, বিদেশি ক্রেতা অনেক বাড়বে। বিশ্বের ১২৫টি দেশে আমরা প্রক্রিয়াজাত কৃষিপণ্য রপ্তানি করি, এটা আমরা সবাইকে জানাতে চাই। আমরা যেসব পণ্য রপ্তানি করছি এর ৮০ শতাংশ টাকা কৃষকের কাছে যাচ্ছে। কারণ ২৫ শতাংশ বিদেশি ইনগ্রেডিয়ান ছাড়া পুরো কাঁচামাল কৃষকের পণ্য। বাপার মূল লক্ষ্যই হলো কৃষকদের সঙ্গে নিয়ে এ খাতের ক্রমবর্ধমান বিকাশ নিশ্চিত করা এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যাওয়া।
বাপার সাধারণ সম্পাদক মো. ইকতাদুল হক বলেন, ২০১২ সালে ছোট পরিসরে আমরা এ মেলা শুরু করি। এখন এ আয়োজন অনেক বড়। পোশাকশিল্পের পরে এ খাতের কোনো বিকল্প নেই। গত বছরের জুলাই (২০২৪) থেকে জানুয়ারি (২০২৫) পর্যন্ত এই সাত মাসে পোশাকের পরে শীর্ষস্থানে আছে প্রক্রিয়াজাত পণ্য রপ্তানি, যা ১১ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বাংলাদেশ অ্যাগ্রো প্রসেসরস অ্যাসোসিয়েশন (বাপা) ও রেইনবো এক্সিবিশন অ্যান্ড ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট সার্ভিসেসের (রিমস) উদ্যোগে রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) থেকে শুরু হচ্ছে ‘দশম বাপা ফুডপ্রো ইন্টারন্যাশনাল এক্সপো ২০২৫’। চলবে ২৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। মেলা প্রতিদিন সকাল ১০টায় শুরু হয়ে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত চলবে। মেলায় প্রদর্শনী ছাড়াও প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে। ২২টি দেশের ২০০-এর বেশি প্রতিষ্ঠান মেলায় নিজেদের পণ্য এবং সেবা প্রদর্শন করবে।
এ মেলার সঙ্গে ‘১২তম অ্যাগ্রো বাংলাদেশ এক্সপো ২০২৫’, ‘ফুড ইনগ্রেডিয়েন্ট এক্সপো ২০২৫’ এবং ‘বেকটেক এক্সপো ২০২৫’ নামে আরও তিনটি মেলা অনুষ্ঠিত হবে। বেকটেক এক্সপো ২০২৫ এ বেকারি শিল্পের টেকনোলজি এবং ইনগ্রেডিয়েন্ট প্রদর্শন করা হবে। মেলা সবার জন্য উন্মুক্ত।