সাংবাদিকরা অস্থায়ী পাস নিয়ে সচিবালয়ে প্রবেশ করতে পারবেন বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম।
তিনি বলেন, আগামীকাল সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) থেকে সাংবাদিকরা সচিবালয়ে প্রবেশ করতে পারবেন। তাদের সচিবালয়ে প্রবেশে আর কোন বাধা থাকবে না। একইসঙ্গে ভুয়া সাংবাদিকদের কার্ড বাতিল করতে তিন হাজারের বেশি কার্ড রাখা হবে না বলেও জানিয়েছেন তিনি।
রবিবার (২৯ ডিসেম্বর) বেলা পৌনে ২টার দিকে সচিবালয়ের সামনে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
উপদেষ্টা বলেন, অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড বা সচিবালয়ে প্রবেশ নিয়ে আপনাদের মধ্যে যাতে কোনো ভুল ধারণা তৈরি না হয়, সেজন্য আপনাদের সঙ্গে কথা বলা। আমাদের যে তদন্ত কমিটি করা হয়েছিল সেটার আজকে শেষ দিন, প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য। আজকে পর্যন্ত আমরা কাউকেই সচিবালয় প্রবেশ করার জন্য অনুমতি দিচ্ছি না। সে কারণে আজকে আপনারা প্রবেশ করতে পারছেন না।
নাহিদ বলেন, সচিবালয়ে এর আগে বিভিন্ন সময়ে নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয়েছে। আমরা দীর্ঘমেয়াদী হিসেবে সামনের দিনগুলোর জন্য ভাবছি। বিগত সময়গুলোতে আমাদের প্রায় তিন হাজারের বেশি অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড দেওয়া হয়েছে। আপনারা এটাও ভালো করে জানেন যে, এই তিন হাজার সবাই কিন্তু সাংবাদিক নন। বিভিন্ন পত্রিকার নাম ব্যবহার করে এখানে প্রবেশের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ফলে সেটি আমাদের পুনঃমূল্যায়ন এবং পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রয়োজন। সেজন্য আমাদের কিছুটা সময় লাগবে। একটা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সাংবাদিকদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে নতুন করে স্থায়ী পাসের ব্যবস্থা করব। সেই সময় পর্যন্ত সীমিত সংখ্যক অস্থায়ী পাস আগামীকালকে থেকে দেওয়া হবে। এজন্য আমরা সাংবাদিক সংগঠনগুলোর সঙ্গে বসব।
বর্তমানে যে পাসগুলো আছে সেগুলো বাতিল হয়ে যাবে কি না- প্রশ্নের উত্তরে নাহিদ ইসলাম বলেন, জ্বি। তিন হাজারের বেশি কার্ড আমরা রাখতে পারব না। বেশির ভাগই ভুয়া। আমরা কাল পরশু থেকে আবেদন নেওয়া শুরু করব।
সচিবালয়ে আগুনের ঘটনা প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্টের মাধ্যমে সোমবারের (৩০ ডিসেম্বর) মধ্যে কিছুটা জানা যাবে বলে জানিয়ে নাহিদ বলেন, তদন্তের জন্য, তিন দিনের সময় দেওয়া হয়েছে প্রাথমিক রিপোর্টের জন্য। আমরা সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) কিছুটা জানতে পারবো। তবে ঘটনাটি আমাদের সবার মধ্যে একটা উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। সচিবালয়ে এভাবে আগুন লাগাটা আমরা ভাবছি পরিকল্পনা হতে পারে, স্যাবোটাজ হতে পারে, আর যদি সেরকমটা না হয় তাহলে এই ধরনের দুর্ঘটনা সচিবালয়ে না ঘটে সেটার জন্য দীর্ঘমেয়াদি সংস্কার প্রয়োজন। আশা করি তদন্ত হলে সেটা বলতে পারব। তবে জনগণকে শান্ত থাকার এবং ধৈর্য ধারণ করার আহ্বান থাকবে।
ভবনটি কবে নাগাদ চালু হতে পারে এমন প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেন, সেটি প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পর আমরা জানাতে পারবো।
তিনি বলেন, দর্শনার্থীদের পাস আমরা সীমিত করব। অস্থায়ী পাস যাদের ছিল তারা এই চার মাসে অনেক সমস্যা তৈরি করেছে। আগের সব পাস বাতিল হবে। আমরা নতুন করে পাস দেব নীতিমালা অনুসরণ করে।
উপদেষ্টা বলেন, আমার তো আরেকটা মন্ত্রণালয় আছে, আমি সেখানে বসতে পারি। স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার দুটো মন্ত্রণালয় পুড়ে গেছে, তিনি নগরভবনে বসছেন। এরকম যার অন্য জায়গা রয়েছে সেখানে বসে অস্থায়ীভাবে কাজ করার জন্য ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এর আগে সচিবালার বিটে কর্মরত সাংবাদিকদের সংগঠন বাংলাদেশ সেক্রেটারিট রিপোর্টার্স ফোরামের (বিএসআরএফ) নেতারা স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টের সঙ্গে বৈঠক করে সাংবাদিকদের প্রবেশ করতে দেওয়ার দাবি জানান।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী জানান, আগামীকাল থেকে নিয়মিত কাজ করা সাংবাদিকরা তালিকা অনুযায়ী প্রবেশ করতে পারবেন।
বিএসআরএফ সভাপতি ফসীহ উদ্দিন মাহতাব এবং সাধারণ সম্পাদক মাসউদুল হকসহ নেতারা বৈঠকে অংশ নেন।