সাফ অ-১৯ চ্যাম্পিয়নশীপে রানার্স-আপ হয়েছে বাংলাদেশ। মঙ্গলবার রাতে দেশে ফিরেছেন নাজমুল হুদা ফয়সাল-মোর্শেদ আলীরা। বিমানবন্দর থেকে সরাসরি বাফুফে ভবনে এসেছিল বাংলাদেশ অ-১৯ দল। বাফুফে সভাপতি তাবিথ আউয়াল ও সহ-সভাপতি এবং ডেভলপমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান নাসের শাহরিয়ার জাহেদী বাংলাদেশ যুব দলকে অভ্যর্থনা জানান।
বাফুফের পক্ষ থেকে সাফ অ-১৯ টুর্নামেন্টে রানার্স-আপ হওয়ায় আনুষ্ঠানিক কোনো পুরস্কার ঘোষণা ছিল না। তবে ডেভেলপমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান নাসের শাহরিয়ার জাহেদী ব্যক্তিগত উদ্যোগে স্কোয়াডে থাকা ২৩ জন ফুটবলারকে মঙ্গলবার ৫০ হাজার টাকা করে প্রদান করেছেন। আর্থিক প্রণোদনার পাশাপাশি তার ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান রেডিয়্যান্টের পক্ষ থেকে গিফট হ্যাম্পারও দিয়েছেন। কোচিং স্টাফ ও কর্মকর্তারা শুধু সৌজন্যমূলক উপহার পেয়েছেন। সাফ অ-১৯ দলকে পৃষ্ঠপোষকও ছিল বাফুফের এই সহ-সভাপতির প্রতিষ্ঠান এবং সপ্তাহ দু’য়েক তার যশোরের নিজস্ব শামসুল হুদা একাডেমীতেও অনুশীলন হয়েছিল এই দলের।
বাংলাদেশ যুব ফুটবল দল টাইব্রেকারে নাটকীয়ভাবে ভারতের কাছে হেরে চ্যাম্পিয়ন ট্রফি হাতছাড়া করেছে। বাংলাদেশের ফুটবলারদের কান্না সবার হৃদয় ছুয়েছে। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন ফুটবলারদের পারফরম্যান্সে সন্তুষ্ট। বাফুফে সভাপতি গতকাল অ-১৯ ফুটবলারদের সামনে সাফ ও এএফসির অন্য টুর্নামেন্টের জন্য আরও প্রস্তুতি নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। ডেভলপমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান দীর্ঘমেয়াদী ক্যাম্প পরিচালনার আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।
সাফ অ-১৯ টুর্নামেন্টে রানার্স-আপ হওয়া ফয়সালরা অনানুষ্ঠানিভাবে হলেও আর্থিক পুরস্কার পেলেন। অথচ সাফ চ্যাম্পিয়ন জয়ী নারী দলকে বাফুফে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েও এখনো অর্থ প্রদান করতে পারেনি। ৯ নভেম্বর বাফুফে নির্বাহী কমিটির প্রথম সভায় সাফ চ্যাম্পিয়ন নারী দলকে দেড় কোটি টাকা পুরস্কার প্রদানের সিদ্ধান্ত হয়। ছয় মাস পেরিয়ে গেলেও বাফুফে সাবিনাদের সেই প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে পারেনি। বাফুফের পরবর্তী তিন সভা এ নিয়ে কোনো আলোচনাও হয়নি।
বাফুফের নারী উইংয়ের চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার কিরণ সরকার ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে ফুটবলারদের পাশে দাঁড়ানোর অনুরোধ জানান প্রায়ই। সাফ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা তাৎক্ষণিকভাবে এক কোটি টাকা প্রদান করেছেন। বিসিবি, বিওএ, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীসহ আরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠান সাফ চ্যাম্পিয়ন সাবিনাদের আর্থিক পুরস্কার ও সম্মাননা দিয়েছে। অথচ খোদ বাফুফেই নিজেদের ঘোষণা বাস্তবায়ন করতে পারেনি। বাফুফের নতুন সভাপতি তাবিথ আউয়াল ও তার অত্যন্ত আস্থাভাজন সহ-সভাপতি ফাহাদ করিম প্রায়ই ফুটবল ফেডারেশনের নতুনত্ব- পেশাদারিত্বের বুলি আওড়ালেও কার্যত অপেশাদারিত্বের ছড়াছড়ি!
বাফুফে নির্বাচনে কর্মকর্তারা চেয়ারের জন্য কাড়ি কাড়ি অর্থ খরচ করেন। নির্বাচনের আগে ফুটবল উন্নয়নে নানা অঙ্গীকারও দিলেও নির্বাচনের পর হাতেগোণা কয়েকজন ছাড়া অন্যরা ফেডারেশনের কর্মকাণ্ডে আর্থিকভাবে তেমন সহায়তা করেন না। না হলে ২১ জন নির্বাহী কমিটিতে থাকার পরও সাবিনাদের দেড় কোটি টাকা বকেয়া পড়ে থাকে!