জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় দেশের স্বার্থে করা হয়েছে : পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

ফানাম নিউজ
  ২৪ জুলাই ২০২৫, ২২:১৩

ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনের কার্যালয় আমাদের স্বার্থেই স্থাপন করা হয়েছে জানিয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেছেন, চাইলে ছয় মাসের নোটিশে যেকোনো সময় সরিয়ে দেওয়া যাবে। তবে আমার মনে হয় না, সে রকম পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে।

বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি এ কথা বলেন।

ঢাকায় মানবাধিকার হাইকমিশনের কার্যালয় স্থাপনের সিদ্ধান্তে বিশেষজ্ঞরা ভিন্নমত পোষণ করছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘এই অফিস স্থাপনের বিষয়ে দুই বছর পর রিভিউ করা যাবে। চাইলে ছয় মাসের নোটিশে যেকোনো সময় সরিয়ে দেওয়া যাবে। তবে আমার মনে হয় না, সে রকম পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে। আমরা তো নিজেদের স্বার্থ দেখেই কাজটি করেছি।

তাদের প্রস্তাবের পর যে একটি অ্যাগ্রিমেন্ট সই করে দিয়েছি, এমন নয়, আমরা দীর্ঘ সময় নিয়েছি। আমাদের স্বার্থ যেন ক্ষুণ্ন না হয়, সেটা দেখেই করেছি। তবে বিশেষজ্ঞদের প্রতি আমার পূর্ণ শ্রদ্ধা আছে।’
চীন তাদের নদীতে যে বিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে, এতে বাংলাদেশের ওপর কোনো প্রভাব পড়বে কি না জানতে চাইলে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের নদীগুলোর উৎস আমাদের দেশে নয়।

সেই নদীগুলোর ওপরে অবকাঠামো হয়েছে, হতে থাকবে। আমরা সেটা ঠেকাতে পারব না। আমাদের দেখতে হবে যে, এতে করে আমাদের পরে ক্ষতি যাতে না হয়, যদি হয় সেটা যেন খুব সীমিত থাকে। এটা আমাদের চেষ্টা থাকবে। চীনের রাষ্ট্রদূত আমার কাছে এসেছিলেন, এটা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

তিনি আমাদের জানিয়েছেন, একটা বাঁধ দিয়ে যে হাইড্রো পাওয়ার তৈরি হয়, এটা তেমন নয়, তারা নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করছেন, কয়েক ধাপে পানি ব্যবহার করছেন, এর মাধ্যমে পানি প্রত্যাহার হবে না বলে তারা আশ্বস্ত করেছেন। কাজেই এটা নিয়ে বিচলিত হওয়ার কারণ নেই। 

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শুল্ক প্রত্যাহার নিয়ে কী আলোচনা হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আলোচনা এখনো শেষ হয়নি। যারা আলোচনা করছেন, আপনারা তাদের জিজ্ঞেস করুন। মাঝ পথ থেকে আমার কথা বলাটা উচিত হবে না।’

অগ্নিদগ্ধদের চিকিৎসাসেবা দিতে ভারত ঢাকায় একটি বিশেষ মেডিক্যাল টিম পাঠিয়েছে। এটি কি দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কে শীতলতার বার্তা দেয় কি না, জানতে চাইলে তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘আমরা ভারতের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক চাই। পারস্পরিক শ্রদ্ধার ভিত্তিতে গুড ওয়ার্কিং রিলেশন্স চাই। আমাদের এই অবস্থান অটুট আছে। আমরা কিন্তু ভারতের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক চাইনি—এ ধরনের কোনো কথা কিন্তু কেউ কখনো বলেনি। আমি বা আমার সরকারের ভেতরে কেউ বলেনি।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের কার্টেসি আছে, সেগুলো আমরা করেছি। এ ঘটনা ঘটার পর (বিমান বিধ্বস্ত) যে দেশগুলো সহায়তা দিতে চেয়েছে তার মধ্যে ভারত একটি। আমরা বার্ন ইউনিটের কাছে তথ্য নিয়েছি, তাদের কী প্রয়োজন, তারা যা জানিয়েছেন—সেগুলো আমরা তাদের (ভারতীয় প্রতিনিধি দল) জানিয়েছি। তাদের দিক থেকে দুজন ডাক্তার ও নার্স এসেছেন। তাদের যেটুকু সেবা দেওয়ার তারা দেবে। দেখুন, দুই দেশের মধ্যে মানুষে মানুষে যোগাযোগ সব সময়ে ভালো।’

তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘আমরা কারো সঙ্গে এমন কিছু করিনি যে সম্পর্ক খারাপ হবে। প্রতিবেশীর সঙ্গে ভালো সম্পর্ক করার বিষয় ছিল এবং কারো ওপরে যে খুব বেশি অতিরিক্ত নির্ভরশীলতা করেছি, এটা নয়। আমাদের স্বার্থ দেখেছি। ভারতের সঙ্গে আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে, ভালো সম্পর্ক বজায় রাখা। তবে পারস্পরিক শ্রদ্ধা এবং ভালো কাজের পরিবেশ থাকা দরকার।’

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়