ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে পূর্ব বিরোধের জেরে মনমোহিনী দাস নামে এক বৃদ্ধার লাশ শ্মশানে নিয়ে যেতে রাস্তা না দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে। পরে পুকুর দিয়ে ওই লাশ শ্মশানে নিয়ে দাহ করা হয়েছে।
সম্প্রতি ঐ উপজেলার তালশহর (পশ্চিম) ইউনিয়নের পশ্চিমপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। এ-সংক্রান্ত কিছু ছবি ও ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তালশহর পশ্চিম পাড়ার হরিধন দাসের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল প্রতিবেশী পরিমল দাস ও হারাধন দাসের। হরিধন দাসের বাড়ি থেকে বের হতে নিজের কোনো রাস্তা নেই। বাড়ির উত্তর ও দক্ষিণ পাশের বাড়িগুলোর ভেতর দিয়ে আসা যাওয়া করতে হয়। বৃহস্পতিবার ভোরে হরিধন দাসের ৯০ বছর বয়সী মা মনমোহিনী দাস মারা যান। তার লাশ শ্মশানে নিতে হারাধন দাসের বাড়ির ওপর দিয়ে নিয়ে যেতে অনুমতি চান হরিধন দাসের ছেলে বিজয় দাস। ঐ সময় হারাধন দাস তাদের বাড়ির ওপর দিয়ে লাশ নিয়ে যেতে নিষেধ করেন। পরে বাধ্য হয়ে পুকুরের পানিতে নেমে এক পাশ দিয়ে লাশ শ্মশানে নেয়া হয়।
হরিধন দাসের ছেলে বিজয় দাস বলেন, হারাধন দাসের বাড়িতে অনুমতি নিতে গিয়েছিলাম। কিন্তু তার স্ত্রী অনুমতি দেননি, অন্যদিকে রাস্তা বানিয়ে নিতে বলেছেন। পরে পরিমল দাসের কাছে যাই। তার ছেলেও লাশ নিয়ে যেতে নিষেধ করেন। পরে বাধ্য হয়ে পুকুরের পানি মাড়িয়ে শ্মশানে গেছি।
অভিযুক্ত হারাধন দাস বলেন, আমাদের হিন্দু সম্প্রদায়ের নিয়ম অনুযায়ী কার্তিক মাসে শুধু সবজি খেতে হয়। এসময়ে আমাদের বাড়ির ওপর দিয়ে যদি কেউ লাশ নিয়ে যায়, তাহলে আমাদের হাঁড়ি-পাতিলসহ সবকিছু ফেলে দিতে হবে। নতুন করে এসব কিনতে হবে। তাই আমি নিষেধ করেছি।
হারাধন দাসের বাড়ির মুরুব্বি বীর মুক্তিযোদ্ধা গৌর দাস মাস্টার বলেন, লাশ নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি আমাকে কেউ জানায়নি। জানালে এ ঝামেলা হতো না। ৩-৪ মাস আগেও তাদের বাড়ির একজন মারা গেছে, তখন লাশ নিতে অনুমতি দিয়েছি।
তালশহর (পশ্চিম) ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবু সামা বলেন, আমাকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। দুই পরিবারকে নিয়ে বসে ঘটনাটি মীমাংসা করা হবে।
আশুগঞ্জ থানার ওসি আজাদ রহমান বলেন, বিষয়টি কেউ জানাননি। তবে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে খোঁজ নিয়ে এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সূত্র: ডেইলি বাংলাদেশ