রমজান মাস শুরু হওয়ার পর থেকে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের হাটবাজারে বেগুন, শসা, লেবু ও কলা চড়া দামে বিক্রি করছেন বিক্রেতারা।
প্রতি বছরের মতো এবারও বিক্রেতারা বাড়তি মুনাফা পেতে এসব সবজি ও ফল চড়া দামে বিক্রি করতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন।
সরবরাহ ঠিক থাকলেও রোজায় চাহিদা বাড়ে এমন সবজির দাম যেন আকাশ ছুঁয়েছে। এতে দিশেহারা হয়ে উঠছেন ভোক্তারা।
জানা যায়, এক সপ্তাহ আগে ৫০ টাকা কেজির বেগুন বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার বিক্রি হয়েছে সর্বোচ্চ ১০০ টাকায়। একই সময় শসা ও লেবুর দাম বেড়েছে তিন গুণ। পাশাপাশি খেজুর, কলাসহ সব ধরনের ফলের দাম পরিকল্পিতভাবে বাড়ানো হয়েছে।
এসব পণ্য কিনতে গিয়ে ক্রেতার দম বন্ধ হওয়ার জোগাড়। বিক্রেতাদের বাড়তি মুনাফা বন্ধে নানা ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কিন্তু এসব কোনো কাজেই আসছে না। ফলে স্বল্প আয়ের সাধারণ ক্রেতাদের নাভিশ্বাস হয়ে উঠেছে।
বৃহস্পতি ও শুক্রবার উপজেলার ভানুগাছ বাজার, শমসেরনগর, আদমপুর, মুন্সিবাজার ও পতনউষারের কাঁচাবাজার ঘুরে ও খুচরা বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রতি কেজি বেগুন বিক্রি হয়েছে ৮০ টাকা থেকে ১০০ টাকায়। যা সাত দিন আগে বিক্রি হয়েছে ৫০-৬০ টাকা। ২৫-৩০ টাকার শসা বিক্রি হয়েছে ৫০ টাকায়। পাশাপাশি প্রতি হালি (৪ পিস) লেবু বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা। যা গত সপ্তাহেও ১৫-২০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
প্রতি আঁটি পুদিনা ও ধনেপাতা বিক্রি হচ্ছে ২০/৩০ টাকায়। অথচ কয়েক দিন আগে ও ১০টাকায় বিক্রি হয়েছে। প্রতি হালি (৪টি) কলা বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকায়। প্রতি কেজি মাঝারি মানের খেজুর বিক্রি হচ্ছে ৪০০-৫০০ টাকায়।
এদিকে বাজারে পণ্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর মনিটরিং ও মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করছে। তবু বাজারে এসব পণ্যেও মূল্য কমছে না।
শাক-সবজি ক্রয় করতে আসা মো. নাদীম, মোস্তাফিজুর রহমান এবং সাদিকুর সামু দেশ রূপান্তরকে অভিযোগ করে বলেন, আমরা আর খেয়ে পড়ে বাঁচতে পারবো না। বাজারে কোনো সবজির সংকট নেই। ৭ দিন আগে যেমন সরবরাহ ছিল, এখন তার চেয়েও বেশি আছে। কিন্তু হঠাৎ করে প্রতি বছরের মতো এবারও রোজায় ব্যবহৃত সব ধরনের সবজির দাম বাড়ানো হয়েছে।
ভানুগাছ বাজারের কাচা মাল আড়তদার আব্দুর রহিম বলেন, ‘গত সপ্তাহ থেকে সবজির দাম একটু বেশি। কাঁচামালের দামের কোনো স্থায়ীত্ব নাই। আমদানির (জোগান) ওপর দাম উঠানামা করে। আর রোজার সময় বেগুন, শসা, লেবুর চাহিদা বেড়ে যায়। এতেও দাম কিছুটা বাড়ে।’
কমলগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মো. জুয়েল আহমেদ দেশ রূপান্তরকে বলেন, 'শুনেছি বাজারে শসা, লেবু ও কলার দাম বেশি। দাম নিয়ন্ত্রণে সরকারিভাবে তদারকি চলছে। স্থানীয়ভাবে পৌরসভার পক্ষ থেকেও দাম নিয়ন্ত্রণে বাজার তদারকি করা হচ্ছে।’
এ বিষয়ে কমলগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সোমাইয়া আক্তার বলেন, ‘উপজেলার বাজারগুলোতে দ্রব্যমূল্যের অতিরিক্ত দাম নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত তদারকি করা হচ্ছে।’
সূত্র: দেশ রূপান্তর