ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ছাত্রদলের নবগঠিত আহ্বায়ক কমিটির আনন্দ মিছিলে হামলা করেন পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা। এসময় প্রায় অর্ধ শতাধিক ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। পরে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে। তবে এ ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি।
সোমবার (১২ জুন) বেলা ১১টার দিকে শহরতলীর বিরাসার বাসস্ট্যান্ড মোড়ে এই ঘটনা ঘটে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির দপ্তর সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলমের সই করা এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জেলা ছাত্রদলের ৭ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। নবগঠিত কমিটির আহ্বায়ক শাহীন, সদস্য সচিব সমীর, যুগ্ম আহ্বায়ক এলভীন লস্কর ও আব্দুল গাফফার রিমন শুক্রবার সকালে জেলা কৃষকদলের আহ্বায়ক আবু শামীম মো. ভিপি শামিমের কান্দিপাড়ার বাসায় যান। সেখানে সদ্য ঘোষিত কমিটির সদস্যদের শুভেচ্ছা দেওয়া হচ্ছে বলে জানতে পারেন পদবঞ্চিত ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। এই খবরে পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা জেলা কৃষক দলের আহ্বায়কের কান্দিপাড়ার বাড়িতে হামলা চালায়। এসময় আবু শামীমের বাড়ির পেছন দিয়ে সদ্য ঘোষিত কমিটির সদস্যরা পালিয়ে আত্মরক্ষা করেন।
একই দিন বিকেলে জেলা শহরের টিএ রোড ও পাওয়ার হাউস রোডে বিক্ষোভ মিছিল করে ছাত্রদলের পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা। মিছিল শেষে তারা কান্দিপাড়ায় জেলা ছাত্রদলের নবগঠিত কমিটির আহ্বায়ক শাহীনুর রহমান ও কৃষক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক কাউসার কাউন্সিলরের বাড়িতে হামলা করে ভাংচুর চালায়। এরপর শনিবার রাতে শহরের কান্দিপাড়ায় সদ্য ঘোষিত ছাত্রদলের কমিটির নেতারা পাল্টা হামলার প্রস্তুতি নেয়। এই খবরের পদবঞ্চিত ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা উল্টো তাদের উপর হামলা করে। এতে উভয় পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। উভয় পক্ষের মধ্যে প্রায় অর্ধশত রাউন্ড গুলি বিনিময় হয় এবং ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।
সোমবার (১২ জুন) সকালে শহরের লোকনাথ দিঘীর মাঠ থেকে নতুন আহ্বায়ক কমিটি গঠন করায় একপক্ষ আনন্দ মিছিল বের করার ঘোষণা দেয়। একই সময় ও স্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের দুর্নীতি এবং লোডশেডিংয়ের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিলের ডাক দেয় পদবঞ্চিত ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা।
এই অবস্থায় সোমবার সকাল থেকে শহরে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সেলিম শেখের নেতৃত্বে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন ছিল।
শহরে এমন পরিস্থিতিতে নতুন কমিটি তাদের কর্মসূচির স্থান পরিবর্তন করে শহরতলীর বিরাসার বাসস্ট্যান্ড এলাকায় আয়োজন করে। সকাল থেকে নেতাকর্মীরা মিছিলে অংশ নিতে বিরাসার বাসস্ট্যান্ড এলাকায় জড়ো হতে থাকেন। এই খবরে পদবঞ্চিত ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা বিরাসার বাসস্ট্যান্ড এলাকায় হামলা করে। এসময় প্রায় অর্ধ শতাধিক ককটেল বিস্ফোরণ হয়। পরে টিয়ার গ্যাস ছুড়ে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সেলিম শেখ বলেন, যেকোনো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ এমরানুল ইসলাম মামলার বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ যায়। টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে।