কড়া নিরাপত্তাব্যবস্থার মধ্য দিয়ে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিটের ফ্রেশ নিউক্লিয়ার ফুয়েল বা ইউরেনিয়ামের পঞ্চম চালান এসে পৌঁছেছে পাবনার ঈশ্বরদীর রূপপুর প্রকল্পে।
সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে শুক্রবার (২৭ অক্টোবর) সকাল ৯টা ৫০ মিনিটের দিকে সড়কপথে ইউরেনিয়াম বহনকারী গাড়িগুলো রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ভেতরে প্রবেশ করে।
ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অরবিন্দ সরকার মোবাইল ফোনে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে শুক্রবার সকাল ৯টা ৪০ মিনিটের দিকে ইউরেনিয়ামের পঞ্চম চালান রূপপুর প্রকল্পের ভেতরে প্রবেশ করে। এর আগে জেলার প্রবেশ সীমানা ঈশ্বরদী উপজেলার মুলাডুলিতে এসে পৌঁছায় সকাল সাড়ে ৯টার দিকে। বৃহস্পতিবার বিশেষ বিমানে ঢাকায় এসে পৌঁছায় রূপপুরের জন্য আনা ইউরেনিয়ামগুলো।
গত ২৮ সেপ্টেম্বর বিকেলে রাশিয়া থেকে ঢাকায় আসার পরদিন ২৯ সেপ্টেম্বর রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিটের ইউরেনিয়ামের প্রথম চালান রূপপুরে আনা হয়েছিল। গত শুক্রবার আনা হয় ইউরেনিয়ামের চতুর্থ চালান।
ইউরেনিয়ামের পঞ্চম চালানের গাড়িবহর ঢাকা থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু পার হয়ে নাটোরের বনপাড়া ও ঈশ্বরদীর দাশুড়িয়া মোড় হয়ে রূপপুর প্রকল্প এলাকার ভেতরে পৌঁছালে প্রকল্পের কর্মীরা স্বাগত জানান।
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রকল্প পরিচালক ড. শৌকত আকবর জানান, প্রথম চালানের মতোই সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দিয়ে আনা হয়েছে। এসব জ্বালানি আমদানি, পরিবহন ও রক্ষণাবেক্ষণের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থার (আইএইএ) সব নির্দেশনা যথাযথভাবে অনুসরণ করা হচ্ছে।
দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় একক প্রকল্প রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র। বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে প্রায় ১ লাখ ১৪ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকার দিচ্ছে ২২ হাজার ৫২ কোটি ৯১ লাখ ২৭ হাজার টাকা। রাশিয়া থেকে ঋণসহায়তা হিসেবে আসছে ৯১ হাজার ৪০ কোটি টাকা।
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের দুটি ইউনিটের উৎপাদনের সক্ষমতা ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট। প্রকল্পের নির্মাণকাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। বিদ্যুৎকেন্দ্র কর্তৃপক্ষ আগামী বছর প্রথম ইউনিট থেকে জাতীয় গ্রিডে পরীক্ষামূলক বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে চায়। একই বছর বাণিজ্যিকভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করার আশা করছে তারা।