শারীরিক বিভিন্ন জটিলতার লক্ষণ ফুটে ওঠে চোখে। এ কারণেই চিকিৎসকের কাছে গেলে তিনি প্রথমেই রোগীর চোখ দেখেন। চোখ ফ্যাকাশে হোক কিংবা রক্তবর্ণ, এর পেছনে থাকতে পারে কঠিন কোনো রোগের ইঙ্গিত। বিশেষ করে কিছু দীর্ঘস্থায়ী ও মারাত্মক রোগের লক্ষণ ফুটে ওঠে চোখে।
বর্তমানে ডায়াবেটিসসহ ক্যানসারে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। জানলে অবাক হবেন, এসব রোগের লক্ষণও ফুটে ওঠে চোখে। চলুন তবে জেনে নেওয়া যাক আর কোন কোন রোগের লক্ষণ ফুটে ওঠে চোখে-
ক্যানসার
বিভিন্ন ধরনের ক্যানসারের মধ্যে স্তন ক্যানসারের লক্ষণ ফুটে ওঠে চোখে। যখন ক্যানসার কোষগুলো শরীরের অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে, তখনই চোখে অস্বাভাবিক লক্ষণ দেখা দেয়।
এক্ষেত্রে চোখের কাঠামোতে অস্বাভাবিক ক্ষত বা টিউমার যেমন ইউভিয়া নির্দেশ করে যে ক্যানসার কোষগুলো চোখের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে।
যদি আপনার দৃষ্টি ঝাপসা হয় কিংবা চোখে ব্যথা, ঝলকানি বা ভাসমান কিছু দেখতে পান সামনে তাহলে ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
ডায়াবেটিস
ঝাপসা দৃষ্টি চোখের একটি সাধারণ সমস্যা। তবে এটি টাইপ ২ ডায়াবেটিসের কারণেও হতে পারে। দীর্ঘস্থায়ী উচ্চ রক্তে শর্করার মাত্রা রক্তনালিতে চাপ সৃষ্টি করে।
ফলে চোখের পেছনে রক্তের দাগ দেখা যায়। যদি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে না থাকে সেক্ষেত্রে রোগী অন্ধও হতে পারেন।
জন্ডিস
চোখের সাদা অংশ হলুদ হয়ে যাওয়া জন্ডিসের অন্যতম এক লক্ষণ। রক্তে অত্যধিক বিলিরুবিন (লাল রক্তকণিকা ভাঙ্গনের ফলে গঠিত একটি হলুদ যৌগ) এর কারণে জন্ডিস হয়।
রক্তে যৌগের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ার কারণ হলো আপনার লিভার এটিকে সঠিকভাবে ফিল্টার করতে পারে না। এই অবস্থায় প্রস্রাব, ত্বক ও চোখ হলুদ বর্ণ ধারণ করে।
হাই কোলেস্টেরল
রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে গেলে আইরিসের চারপাশে একটি সাদা, ধূসর বা নীল বলয় তৈরি হয়। যদিও বার্ধক্যজনিত কারণেও রিং তৈরি হয়, তবে এর আরেকটি কারণ হলো উচ্চ কোলেস্টেরলের মাত্রা।
উচ্চ কিন্তু কোলেস্টেরল হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়। তাই সতর্ক থাকুন ও নিয়ন্ত্রণে রাখুন কোলেস্টেরল।
রেটিনায় সমস্যা
চোখের সামনে যদি কখনো ছোট ছোট আলোর ঘোরাফেরা দেখেনে তাহলে তা রেটিনা ছিঁড়ে যাওয়া বা বিচ্ছিন্নতাকে নির্দেশ করে।
এই লক্ষণ উপেক্ষা করা উচিত নয়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এটি আরও মারাত্মক রূপ নেয়, যা অন্ধত্বের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
চোখে সংক্রমণ
কর্নিয়াতে দৃশ্যমান সাদা দাগ কর্নিয়া সংক্রমণের লক্ষণ হতে পারে। যারা চশমার পরিবর্তে কনট্যাক্ট লেন্স ব্যবহার করেন তাদের মধ্যে এটি বেশিরভাগই দেখা যায়।
ব্যাকটেরিয়া বা ছত্রাকসহ দূষিত লেন্সগুলোর মাধ্যমে এই সংক্রমণ ঘটে। এই অবস্থায় কর্নিয়ায় দাগ ও ব্যথা হতে পারে।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া