ইরানে বেশ কয়েকটি পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনায় বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। রাতভর চালানো এই হামলায় দেশটির অভিজাত বাহিনী রেভল্যুশনারি গার্ডের প্রধান জেনারেল হোসেইন সালামিসহ আরও অনেকেই নিহত হয়েছেন।
এমন অবস্থায় ইসরায়েলের উদ্দেশ্যে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি। তিনি বলেছেন, ইসরায়েলকে কঠোর শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে। এমনকি ইসরায়েলের জন্য করুণ ও যন্ত্রণাময় পরিণতি অপেক্ষা করছে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
শুক্রবার (১৩ জুন) এই তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন। সংবাদমাধ্যমটি বলছে, ইসরায়েলকে তার হামলার জন্য “কঠোর শাস্তি” ভোগ করতে হবে বলে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
শুক্রবার ইসরায়েল ইরানের ওপর যে বড় ধরনের হামলা চালিয়েছে, তাতে একাধিক শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা ও পরমাণু বিজ্ঞানী নিহত হয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন খামেনি। ইসরায়েল দাবি করেছে, এই হামলার লক্ষ্য ছিল ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলো।
ইরানের রাষ্ট্রীয় বার্তাসংস্থা আইআরএনএ মাধ্যমে দেওয়া বিবৃতিতে খামেনি বলেন, “এই হামলা ছিল ভোররাতে সংঘটিত এক নিষ্ঠুর অপরাধ। এতে ইসরায়েল আবাসিক এলাকাও টার্গেট করেছে।”
তিনি আরও বলেন, “এই অপরাধের জন্য দখলদার শাসকগোষ্ঠীকে কঠিন শাস্তি পেতেই হবে। তাদের জন্য এক করুণ ও যন্ত্রণাময় পরিণতি অপেক্ষা করছে এবং তারা সেটা অচিরেই পাবে।”
আয়াতুল্লাহ খামেনি জানান, “শত্রুর এই আক্রমণে আমাদের কিছু কমান্ডার ও বিজ্ঞানী শহীদ হয়েছেন। কিন্তু তাদের স্থলাভিষিক্তরা ও সহকর্মীরা, ইনশাআল্লাহ, কোনো বিরতি ছাড়াই নিজেদের দায়িত্ব চালিয়ে যাবেন।”
এর আগে ইরানের রাজধানী তেহরানে পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনাকে মূল লক্ষ্যবস্তু করে একাধিক হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। ইরানের স্থানীয় সময় ভোর ৪টার দিকে তেহরানে একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়।
এর কিছু সময় পর, তেহরানে তখন ভোর ৫টা ৩০ মিনিট এবং ইসরায়েলের অন্যতম প্রধান শহর তেল আবিবে ভোর ৫টা, ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। পাশাপাশি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ তাদের দেশে জরুরি অবস্থাও ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, খুব শিগগিরই ইসরায়েলের ওপর পাল্টা হামলা চালাতে পারে ইরান।
ইসরায়েল ইরানের ওপর যখন এই হামলা চালায়, ইসরায়েলের মানুষ তখন ঘুমাচ্ছিলেন। কিন্তু সাইরেনের বিকট শব্দে এবং মোবাইলে জরুরি সতর্কবার্তা পেয়ে তারা জেগে ওঠেন।
এদিকে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এ বিষয়ে বলেছেন, “এই হামলা ইরানের পরমাণু সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচির কেন্দ্রে আঘাত হেনেছে” এবং “এটি অনির্দিষ্টকাল চলবে”।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বিবিসিকে জানিয়েছেন, এই হামলার লক্ষ্য ছিল ইরানের পরমাণু কর্মসূচি ও অন্যান্য সামরিক ঘাঁটি। তিনি আরও বলেন, “ইরানের কাছে এত বেশি পরিমাণে পরমাণু উপাদান মজুত রয়েছে, যা দিয়ে তারা কয়েক দিনের মধ্যেই পারমাণবিক বোমা তৈরি করতে পারে।”