খাবারের সন্ধানে এসে মুরগির খামারে পেতে রাখা বৈদ্যুতিক ফাঁদে জড়িয়ে একটি চিতাবাঘের মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যুর পর বাঘটিকে ঝুলিয়ে রেখে উল্লাস করছেন স্থানীয় লোকজন। শুক্রবার (১৮ মার্চ) ভোরে নীলফামারী সদর উপজেলার চত্তরা বড়গাছা ইউনিয়নের কাঞ্চনপাড়া এলাকার অলিয়ারের মুরগি খামার থেকে মৃত চিতাবাঘটিকে উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, অলিয়ার রহমান একজন খামারি। প্রতিদিন কোনো না কোনো প্রাণী ঢুকে তার খামারের মুরগি খেয়ে ফেলে। এ কারণে তিনি অতিষ্ট হয়ে খামারের পেছনে বৈদ্যুতিক ফাঁদ পেতে রাখেন। শুক্রবার ভোরের কোনো একসময় মুরগি খেতে এসে বিদ্যুতের ফাঁদে জড়িয়ে চিতাবাঘটির মৃত্যু হয়।
খামারি অলিয়ার রহমান বলেন, আমার খামারের পেছন দিকে পুরোটাই জঙ্গল। মুরগি বাঁচাতে সেখানে বৈদ্যুতিক ফাঁদ পাতা ছিল। ভোরে স্থানীয়দের চিৎকার শুনে গিয়ে দেখি একটি চিতাবাঘ মরে আছে।
কৃষক মোস্তফা সারোয়ার বলেন, খামারের পাশেই রয়েছে আমার ভুট্টা ক্ষেত। স্থানীয়রা আমাকে জানায়, একটি বাঘ খামারে মরে আছে, আরেকটি বাঘ নাকি আমার ক্ষেতে ঢুকেছে।
বাঘ দেখতে আসা চত্তড়া বড়গাছার স্বপন বলেন, বাঘ মারা পরেছে খবরটি শুনে আমার সন্তানকে নিয়ে বাঘটিকে দেখতে আসি। এসে দেখি বাঘটিকে রাস্তার পাশে ঝুলে রেখে উল্লাস করছে স্থানীয়রা। কেউ বাঘের গায়ে হাত দিয়ে ছবি তুলছে আবার কেউ সেলফি তুলছে। তবে আর একটি বাঘ নাকি পাশের ক্ষেতে ঢুকে পড়েছে। এই ঘটনায় অনেকেই আতঙ্কে রয়েছেন। তারা বলছেন, রাতে যদি বাঘটি এলাকায় চলে আসে তাহলে তো বিপদ ঘটে যেতে পারে।
জেলা বন বিভাগের কর্মকর্তা মোনায়েম খান বলেন, এটি একটি লেপার্ড। ভারতীয় কোনো জঙ্গল বা কোনো বন থেকে এটি আসতে পারে। আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে আসবেন। তাদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নীলফামারী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রউফ বলেন, এটি বন বিভাগের বিষয়। তারা কী পদক্ষেপ নেবেন তা আমাদের জানালে সেই অনুযায়ী আমরা ব্যবস্থা নেবো।
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ওসি) জেসমিন নাহার বাঘের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আমি শুনেছি একটি বাঘ ফাঁদে পড়ে মারা গেছে, আর একটা ভুট্টা ক্ষেতে রয়েছে। জীবিত বাঘটিকে উদ্ধারের জন্য রংপুরের স্পেশাল টিমকে খবর দেওয়া হয়েছে। তারা আসলেই উদ্ধার কাজ শুরু হবে। তাই তিনি স্থানীয়দের নিরাপদ দূরত্বে যাওয়ার অনুরোধ করেছেন।
সূত্র: জাগো নিউজ