কুড়িগ্রামের রাজারহাট আবহাওয়া ও কৃষি পর্যবেক্ষণাগার গত ৪৮ ঘণ্টায় জেলায় ১৪১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে।
আরও বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আর এ বৃষ্টিপাতে ডুবে গেছে কৃষকের ধান। যারা ধান কেটেছেন তারাও মাড়াই করতে পারছেন না বৃষ্টির কারণে।
এতে করে ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন কৃষকরা। ডুবে যাওয়া আধা পাকা ধান। চড়া দামের শ্রমিক দিয়ে কেটে ঘরে তুলছেন কৃষকরা। কৃষকদের অভিযোগ ধান কাটতে দিগুণ দামেও মিলছে না কৃষি শ্রমিক। শ্রমিক সঙ্কটের কারণে নিজেরাই নেমেছেন ধান কাটার কাজে। ডুবে যাওয়া ধান কেটে নৌকাসহ বিভিন্ন উপায়ে তুলছেন রাস্তার ধারে ও উঁচু জায়গায়।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে এমন দুর্ভোগের চিত্র। অনেকে পানিতে থাকা ধান কাটলেও মাড়াই করতে পারছেন না। ফলে গাদায় নষ্ট হচ্ছে এসব ধান। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নাগেশ্বরী, ভূরুঙ্গামারী, রাজারহাট, ফুলবাড়ি, উলিপুর ও সদর উপজেলার বেশ কিছু এলাকার নিম্নাঞ্চলের ধান পানিতে ডুবেছে।
এর মধ্যে নাগেশ্বরী উপজেলা কৃষি দপ্তর জানায়, উপজেলার বানুর খামার, হাউরিরভিটা, গোদ্ধারের পাড়, চচলার বিল, বোয়ালের দারা, বাগডাঙ্গা, সন্তোষপুর ইউনিয়নের আমতলা, ছিলা খানা, নাওডাঙ্গা, ধরকা বিল, রামখানা ইউনিয়নের দক্ষিণ রামখানা, বানারপার, রায়গঞ্জ ইউনিয়নের সাপখাওয়া বিল, বড়বাড়ী, কেদার ইউনিয়নের সুবলপাড়, সাতানা, কচাকটা ইউনিয়নের জালির চরসহ বেশ কিছু এলাকার প্রায় ২০ হেক্টর আধাপাকা, পাকাসহ বের হওয়া ধান ডুবেছে এ বৃষ্টিপাতে।
নাগেশ্বরী উপজেলার সন্তোষপুর ইউনিয়নের আমতলা এলাকার কৃষক আব্দুল কাদের জানিয়েছেন, ৩ বিঘা জমিতে আমতলা বিলে বোরো চাষ করেছেন। সব ধান এখন পানির নিচে।
হাউরিভিটা এলাকার দেলবর আলী জানান, তার ৫ বিঘা জমির বোরো পানিতে ডুবেছে। ডুবে যাওয়া আধাপাকা ধান কাটছেন তারা। কৃষক খলিলুর রহমান জানান, এমন পরিস্থিতিতে শ্রমিক সংকট দেখা দিয়েছে। দ্বিগুণ দামেও মিলছে না কৃষি শ্রমিক।
কিদার ইউনিয়নের সুবলপাড় এলাকার কৃষক রফিকুল ইসলাম বলেন, ডুবে যাওয়া ধান অনেক কষ্টে কাটলেও রোদ না থাকায় মাড়াই করতে পারছেন না।
সদর উপজেলার কাঁঠালবাড়ি ইউনিয়নের কালে গ্রামের কৃষক সফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, দুই বিঘা জমিতে বোরোর আবাদ করেছি। ফলনও খুবই ভালো হয়েছে এবং ধান পেকে গেছে। গত শুক্রবার বৃষ্টিতে জমির পাকা ধান পানিতে তলিয়ে গেছে। দিনমজুর নিয়ে ডুবে যাওয়া ধান কাটছি। না কাটলে তো পঁচে যাবে।
কুড়িগ্রামের রাজারহাট আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সবুর মিয়া বলেন, গত ৪৮ ঘণ্টায় জেলায় ১৪১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। আজ আবহাওয়া স্বাভাবিক হবার সম্ভাবনা রয়েছে।
কৃষি অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আব্দুর রশীদ জানান, এই বৃষ্টিপাতে বোরো চাষীরা ধান কাটা, মাড়াই এবং শুকাতে কিছুটা সমস্যার মুখে পড়েছে। তবে ইতোমধ্যে ৭০ শতাংশ ধান কাটা হয়ে গেছে। বৃষ্টির কারণে তেমন ক্ষতি হবে না।
সূত্র: আরটিভি