মেহেরপুরে এবার আমের পর্যাপ্ত ফলন হয়নি। কৃষি বিভাগ বলছে, তুলনামূলক বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় অনেক বাগানের আমের গুটি আগেই ঝরে গেছে।
ঢাকাসহ সারাদেশে মেহেরপুরের আমের বেশ রয়েছে চাহিদা রয়েছে। জেলার বিখ্যাত হিমসাগর আম দেশ ছাড়িয়ে বিদেশেও সমাদৃত। তাই বিভিন্ন জেলা থেকে ব্যবসায়ীরা এসে এখানকার বাগান থেকে আম কিনে নিয়ে যান।
মেহেরপুরের বড়বাজার এলাকার আম চাষি আলতাব হোসেন বলেন, সঠিক সময়ে বৃষ্টি না হওয়া ও বালাইনাশক কাজ না করায় আমের ব্যাপক ফলন বিপর্যয় হয়েছে। আমার যে গাছে ১৪ থেকে ১৫ মণ আম হওয়ার কথা সেই গাছে দুই থেকে তিন মণ আম হচ্ছে। তবে এবছর চাহিদা থাকায় বাজারে দাম ভালো রয়েছে। ভালোমানের প্রতি মণ আম দুই হাজার থেকে দুই হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
আম চাষি জহিরুল জানান, বাইরে থেকে ব্যবসায়ী আসছে। বাগানে আম রয়েছে খুবই সামান্য পরিমাণ। আমের অনেক চাহিদা এবং দামও ভালো। তবে গাছে এবছর আম খুবই সামান্য রয়েছে।
আমঝুপি গ্রামের বাগান মালিক ও আম চাষি সাখাওয়াত হোসেন জানান, এবছর আমের যে লক্ষ্যমাত্রা ছিল তার অর্ধেক আমও গাছে নেই। যে গাছে গতবছর ১৩ থেকে ১৪ মণ আম হয়েছে। সেই গাছে দুই থেকে তিন মন আম পাওয়া যাচ্ছে।
মাদারীপুর থেকে আম নিতে আসা ব্যবসায়ী শাহিনুর ইসলাম বলেন, সারাদেশে মেহেরপুরের আমের চাহিদা রয়েছে। তাই প্রতিবছর এ জেলায় আম কিনতে আসি। এবছর আমের চাহিদা অনেক। দামও ভালো কিন্তু চাহিদা অনুযায়ী আম পাওয়া যাচ্ছে না।
মেহেরপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সামসুল আলম জানান, স্বাভাবিকের চেয়ে তুলনামূলক কম বৃষ্টিপাত হওয়ায় অনেক বাগানের আমের গুটি আগেই ঝরে গেছে। তাই এবছর আমের ফলন একটু কম । ২৫ মে থেকে গুটি ও বোম্বে জাতের আম সংগ্রহ করছেন ব্যবসায়ী ও বাগান মালিকরা। উন্নত জাতের আমের মধ্যে ২৮ মে থেকে মেহেরপুরের বিখ্যাত হিমসাগর এবং ৫ জুন থেকে গোপালভোগ পাড়া যাবে। এছাড়া ৮ জুন ল্যাংড়া, ১৫ জুন আম্রপালি, ২০ জুন মল্লিকা, ৩০ জুন ফজলি, ৩০ জুলাই বিশ্বনাথ, সখিনাও বারি-৪ জাতের আম পাড়তে পারবেন চাষিরা।
তিনি আরও জানান, জেলায় ২ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে আমের বাগান রয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২৮ হাজার ৭৫৯ মেট্রিক টন।
জেলা প্রশাসক ড. মনসুর আলম খাঁন জানান, জেলা প্রশাসন কৃষি বিভাগ, বাগান মালিক এবং ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সমন্বয় করে আম পাড়ার সূচি নির্ধারণ করেছে। এর ব্যত্যয় করে কোনো চাষি বা ব্যবসায়ী কেমিক্যাল দিয়ে আম পাকিয়ে বাজারজাত করলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এজন্য জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত প্রস্তুত রয়েছে।
সূত্র: জাগো নিউজ