চারদিকে সবুজের সমারোহ। সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে আছে ড্রাগন গাছ। গাছে শোভা পাচ্ছে গোলাপি, লাল আর সবুজ ফল। বাড়ির আঙিনায় বাণিজ্যিকভাবে প্রায় এক একর জমিতে ১০০টি ড্রাগন চাষ করেছেন। ফলনও ভালো হয়েছে।
প্রতিবছর ড্রাগন চাষ করে ৩০-৫০ হাজার পর্যন্ত মুনাফা অর্জন করেন। তবে এবার বেশি মুনাফা অর্জন হবে তার। বলছিলাম রাঙ্গামাটির লংগদু উপজেলার চাইল্যাতলি বাসিন্দা জাহাঙ্গীর আলমের কথা। এ ড্রাগন চাষে পেয়েছে সফলতা।
ড্রাগন চাষি জাহাঙ্গীর আলম জানান, ২০১১ সালে রাঙ্গামাটির কাপ্তাই উপজেলার রাইখালী কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউটে ড্রাগনে চাষ দেখে তিনি এ ফলের চাষবাদ করার উদ্যোগ নেন। পরে তিনি রাঙ্গামাটি সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মুকুল দেওয়ানের কাছ থেকে চারটি ড্রাগন চারা এনে রোপণ করেন। এরপর থেকেই প্রতিবছর ড্রাগনের চাষ করে আসছেন তিনি।
এবারও বাড়ির আঙিনায় বাণিজ্যিকভাবে প্রায় এক একর জমিতে ড্রাগন চাষ করেছেন। ফলনও ভালো হয়েছে। এছাড়াও তিনি প্রতিবছর ড্রাগন চাষ করে ৩০-৫০ হাজার পর্যন্ত মুনাফা অর্জন করেন। তবে প্রতিবছরের তুলনায় এবার বেশি মুনাফা অজর্ন হবে। তার কাছে প্রায় চারশটি ড্রাগনের চারা রয়েছে।
তিনি এলাকার মানুষকে এই ফল চাষে আগ্রহী করার জন্য চারা বিতরণ ও বিক্রিও করেন এবং এলাকার অনেকেই এ ফলের চারা লাগিয়ে লাভবান হচ্ছেন। একটি ড্রাগন ফলের ওজন ৫০০ গ্রাম থেকে প্রায় ৭০০গ্রাম পর্যন্ত হয়ে থাকে। প্রতি কেজি ড্রাগন ফল বিক্রি হয় ৩৫০-৪০০ টাকা পর্যন্ত।
তিনি আরো জানান, সরকারিভাবে রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে ক্ষুদ্র খামারীদের প্রদর্শনী দিলে ড্রাগনে প্রচার বাড়বে। এলাকার প্রান্তিক কৃষকের এ ফল চাষে আগ্রহ বাড়বে। ড্রাগন চাষ খুবই সহজ ও বেশ লাভজনকও বটেই। অল্প পরিচর্যাই অধিক ফলন পাওয়া যায়। সার ওষুধ বেশি লাগে না,পোকামাকড়ের আক্রমণ নেই বললেই চলে। ড্রাগন গাছের গায়ে কাটা যুক্ত থাকায় পশু-পাখি ক্ষতি করতে পারে না।
রাঙ্গামাটি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক তপন কুমার পাল জানান, এবার রাঙ্গামাটিতে ১৫ দশমিক ৩৫ হেক্টর জমিতে ড্রাগন চাষ হয়েছে। উৎপাদন হয়েছে ৯০ টন। অন্য ফসলের তুলনায় ড্রাগন চাষ লাভজনক। চারা লাগানোর এক বছরের মধ্যে ফল আসতে শুরু করে। পুষ্টিগুণ, আকার-আকৃতি ও দামের কারণে বাজারে এই ফলের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।