বঙ্গপোসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে সাতক্ষীরায় রবিবার থেকে ঝড়ো হাওয়ার পাশাপাশি মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। বিশেষ করে উপকূলীয় উপজেলা আশাশুনি ও শ্যামনগরের বেশ কয়েকটি নদ-নদীতে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে দুই থেকে তিন ফুট পানি বেড়েছে। এতে অধিক উচ্চতায় জলোচ্ছ্বাস হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে সাতক্ষীরা আবহাওয়া অফিস। এদিকে উপকূলীয় অঞ্চলে তিন নম্বর সর্তকতা সংকেত জারি করা হয়েছে।
নিম্নচাপের প্রভাবে উপকূলীয় এলাকার জরাজীর্ণ ৩৫টি পয়েন্টে প্রায় ৬২ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। ভাঙনের আতংকে রয়েছেন সেখানকার বাসিন্দারা।
উপকূলীয় উপজেলা শ্যামনগরের দ্বীপ ইউনিয়ন গাবুরার ইউপি চেয়ারম্যান মাসুদুল আলম বলেন, গতকাল থেকেই থেমে থেমে হালকা, মাঝারি ও ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। নদীতে জোয়ারের সময় বাতাসের তীব্রতা বাড়ছে। ইতোমধ্যে ভারী বর্ষণের কারণে শতাধিক ঘের পানিতে ভেসে গেছে। এছাড়া গাবুরা, নাপিতখালি, জেলেখালি, তিন নম্বর পোল্ডারসহ বিভিন্ন এলাকায় উপকূল রক্ষা বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। যেকোনও সময় বাঁধ ভেঙে যেতে পারে।
আশাশুনি উপজেলার খাজরা ইউপি চেয়ারম্যান শাহনেওয়াজ ডালিম বলেন, ইউনিয়নের গদাইপুর এলাকায় সোমবার (১২ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টার দিকে ৬-৭ হাত জরাজীর্ণ বেড়িবাঁধ ভেঙে যায়। পরে দুপুরের মধ্যে স্থানীয়দের নিয়ে স্বেচ্ছাশ্রমে তা সংস্কার করা হয়। তবে, পরবর্তী জোয়ারে কী হবে তা বলা যাচ্ছে না।
সাতক্ষীরা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জুলফিকার আলী রিপন বলেন, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে ঝড়ো হাওয়াসহ মাঝারি ও ভারী ধরনের বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। এর ফলে সাতক্ষীরার উপকূলীয় এলাকার নদ-নদীতে স্বাভাবিকের চেয়ে দুই থেকে তিন ফুট উচ্চতায় জলোচ্ছাস হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। বঙ্গপোসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসকে উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। আগামী দুই-একদিন আবহাওয়া পরিস্থিতি এমন থাকতে পারে।
তিনি আরও জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ৫৯.৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে।
সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল খায়ের বলেন, নদীতে এখন জোয়ার রয়েছে। স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে প্রায় তিন ফুট উচ্চতায় পানি প্রবাহিত হচ্ছে। তবে এখন পর্যন্ত কোথাও ভাঙনের খবর পাওয়া যায়নি। পানি উন্নয়ন বোর্ড ১ও২-এর আওতায় মোট ৮০ কিলোমিটার বেডিবাধঁ রয়েছে। এর মধ্যে জরাজীর্ণ ৩৫টি পয়েন্টে প্রায় ৬২ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে। তবে ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ সংস্কার কাজ চলমান রয়েছে বলে জানান তিনি।