দিনাজপুরের রামসাগরে বড়শিতে ৩০ কেজি ওজনের বিগহেড (কার্প) মাছ ও ২৫ কেজি ওজনের একটি কচ্ছপ ধরা পড়েছে। কচ্ছপটিকে তাৎক্ষণিকভাবে রামসাগরে অবমুক্ত করা হয়।
শনিবার (১২ নভেম্বর) দুপুর ২টার দিকে রামসাগরে শিকারির হুইল বড়শিতে মাছ ও কচ্ছপটি ধরা পড়ে।
রামসাগর জাতীয় উদ্যানের কেয়ারটেকার বাবুল হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয় ও সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বৈশ্বিক মহামারি করোনার কারণে গত দুই বছর রামসাগরে মাছ ধরার টিকিট দেওয়া হয়নি। শুক্রবার (১১ নভেম্বর) প্রথম টিকিট দেওয়া হয়। একটি টিকিটের মূল্য তিন হাজার টাকা। এই টিকিট দিয়ে শুক্রবার ও শনিবার দুদিন শিকারিরা বড়শি দিয়ে মাছ শিকার করেন।
প্রথম দিনে প্রায় ২০০ টিকিট বিক্রি হয়। শৌখিন মৎস্য শিকারিরা রামসাগর জাতীয় উদ্যানে মৎস্য শিকারে মেতে ওঠেন। শিকারিদের বড়শিতে মাছও বেশ ধরা পড়ে। কেউ পাঁচ কেজি, কেউ ১০ আবার কেউ ১৬ কেজি ওজনের মাছ পেয়েছেন। তবে সবচেয়ে বড় মাছ পেয়েছেন চার সৎস্য শিকারি। একটি ৩০ কেজি ওজনের বিগহেড তাদের বড়শিতে ধরা পড়ে।
শেখ আরমান, আমিনুল ইসলাম, আব্দুল্লাহ এবং আবুবক্কর সিদ্দিক শান্ত নামের চারজন মিলে তিন হাজার টাকা দিয়ে যৌথভাবে একটি টিকিট কেটেছিলেন। তাদের সবার বাড়ি দিনাজপুর শহরের উপশহরে।
শৌখিন মৎস্য শিকারি শেখ আরমান জানান, তারা চারজন মিলে একটি টিকিট কেটে শুক্রবার সন্ধ্যায় রামসাগরে মাছ শিকারে যান। সেখানে তারা সাররাত এবং শনিবার দুপুর পর্যন্ত কোনো মাছ পাননি। দুপুর ২টার দিকে তাদের বড়শিতে একটি মাছ ধরা পড়ে। তারা মাছের শক্তি দেখে বুঝতে পারেন এটি অনেক বড় মাছ। মাছটি পানিতে প্রায় পৌনে একঘণ্টা লাফালাফি করে। পরে তারা মাছটি পানি থেকে তুলতে সক্ষম হন। মাছটি ডাঙায় তুলে দেখেন এটি বিগহেড (কার্প) মাছ। ওজন ৩০ কেজি।
মৎস্য শিকারি আবুবক্কর সিদ্দিক শান্ত বলেন, ‘আমি আগে ৩০ কেজি ওজনের মাছ দেখিনি। রামসাগরে প্রথমবারের মতো ৩০ কেজি ওজনের মাছ শিকার করলাম। অনেক আনন্দ লাগছে। অনেকে মাছটির দাম ৩০-৪০ হাজার টাকা পর্যন্ত বলেছেন। কিন্তু মাছটি আমরা বিক্রি করবো না, নিজেরাই খাবো।’
মাছটি উপশহর এলাকায় নিয়ে আসা হলে একনজর দেখতে শত শত মানুষ ভিড় জমান।
৩০ কেজি ওজনের মাছটি কাটার জন্য ডাক পান মহল্লার মাছ ব্যবসায়ী নাজমুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘আমি জীবনে এত বড় মাছ কাটিনি। এই প্রথম ৩০ কেজি ওজনের বিগহেড কাটছি।’
রামসাগর জাতীয় উদ্যানের কেয়ারটেকার বাবুল হোসেন বলেন, শুক্রবার জেলা প্রশাসন থেকে টিকিট দেওয়া শুরু করেছে। প্রতি সপ্তাহে শুক্র ও শনিবার দুদিন টিকিট বিক্রি করা হবে। চলবে একমাস। এরপর আর টিকিট দেওয়া হবে না।
এদিকে রামসাগর জাতীয় উদ্যানের আরেক কেয়াটেকার মেহেদি হাসান জানান, রামসাগরে টিকিট কেটে মাছ শিকার করতে আসা এক মৎস্য শিকারির বড়শিতে ২৫ কেজি ওজনের একটি কচ্ছপ ধরা পড়েছিল। যেহেতু কচ্ছপ শিকার নিষিদ্ধ, তাই প্রাণীটি তাৎক্ষণিকভাবে রামসাগরে অবমুক্ত করা হয়।