সিরাজগঞ্জে সদর ও শাহজাদপুর উপজেলায় আওয়ামী লীগের দুটি কার্যালয়ে হামলা-ভাঙচুর, ককটেল বিস্ফোরণ ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় সদর উপজেলার বিএনপির ১৪ নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ১৫০ জনের নামে মামলা হয়েছে। অন্যদিকে শাহজাদপুরের ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানা গেছে।
বুধবার (২৩ নভেম্বর) সন্ধ্যায় শাহজাদপুর থানার ওসি নজরুল ইসলাম মৃধা ও সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সুমন চন্দ্র দাস এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
অভিযোগ উঠেছে মঙ্গলবার রাতে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার কালিয়া হরিপুর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ অফিস ও শাহজাদপুর উপজেলার গাড়াদহ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে বিএনপির নেতাকর্মীরা হামলা চালান। ঘটনাস্থল থেকে কয়েকটি ককটেল বোমা উদ্ধার করা হয়েছে।
এ ঘটনায় ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সভাপতি জাকির হোসেন বাদী হয়ে সদর উপজেলা বিএনপির ১৪ নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ১৫০ জনের নামে থানায় মামলা দায়ের করেছে।
মামলার আসামিরা হলেন সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি রফিক সরকার, কালিয়া হরিপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আনিসুর রহমান, জেলা যুবদলের সভাপতি মির্জা আব্দুল জব্বার বাবু, সাধারণ সম্পাদক মুরাদুজ্জামান মুরাদ, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি জুনায়েদ আহমেদ সবুজ, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন রাজেশ, সদর উপজেলা ছাত্রদলের আহবায়ক জীবন, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম সম্পাদক আকাশ খন্দকার, বিএনপিরকর্মী বোরহান তালুকদার, শরীফ, হীরো, মুছা, আব্দুর রাজ্জাক ও সবুজ।
শাহজাদপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক এমপি চয়ন ইসলাম বলেন, মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে উপজেলার গাড়াদহ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে বিএনপির নেতাকর্মীরা হামলা চালান। এ সময় অফিসের টেবিল-চেয়ার এবং বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি ভাঙচুর করা হয়। এছাড়া একটি মোটরসাইকেলেও আগুন ধরিয়ে দেয় হামলাকারীরা। এ সময় হাত বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আতঙ্কের সৃষ্টি করা হয়। ঘটনার প্রতিবাদে বুধবার বিকাল ৪টায় গাড়াদহ ইউনিয়ন পরিষদের সামনে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা প্রতিবাদ সমাবেশ করেন।
শাহজাদপুর থানার ওসি নজরুল ইসলাম জানান, গাড়াদহ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ অফিস ভাঙচুরের ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। ঘটনাস্থল থেকে কয়েকটি হাতবোমা উদ্ধার করা হয়েছে।
এ বিষয়ে কালিয়া হরিপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, মঙ্গলবার রাত ১২টার দিকে বিএনপি নেতাকর্মীরা ৬ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও হাত বোমার বিস্ফোরণ ঘটায়। এ ঘটনার প্রতিবাদে আমরা সমাবেশ ও মামলা করেছি।
সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সুমন চন্দ্র দাস বলেন, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ অফিস ভাঙচুরের ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে পাঁচটি হাতবোমা উদ্ধার করা হয়।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও রাজশাহী বিভাগীয় সমাবেশের প্রধান সমন্বয়ক ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, রাজশাহীর বিভাগীয় সমাবেশ বানচাল ও নস্যাৎ করতে শুধু সিরাজগঞ্জ নয় নাটোর, বগুড়া, নওগা, পাবনাসহ বিভিন্ন জেলায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা নিজেরাই তাদের দলীয় কার্যালয় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও সাজানো মামলা করছে।