কুমিল্লার দেবীদ্বারে এক স্কুলছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষককে ৬ ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখেন অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা। এসময় ওই বিদ্যালয়ের কয়েকটি দরজা ভাঙচুর করে শিক্ষার্থীরা। এছাড়াও প্রধান শিক্ষকের মোটরসাইকেল সহ দুইটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেয় তারা। খবর পেয়ে পুলিশ অবরুদ্ধ শিক্ষককে উদ্ধার করতে গেলে শিক্ষার্থী ও বিক্ষুব্ধদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। পরিস্থতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ফাঁকা গুলি ছোড়ে পুলিশ। এতে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকসহ অন্তত ১২ জন আহত হন।
বুধবার (১৫ মার্চ) বিকেল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত উপজেলার মাশিকাড়া উচ্চ বিদ্যালয় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
আহতদের মধ্যে রয়েছেন- সিয়াম (১৫), মিনহাজ (১৭), অলি (১৬), আকাশ (১৬) আরিফুল ইসলাম (২৬), সাব্বির (১৮) ও হৃদয় (১৭)। তাদেরকে দেবীদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বাকিদের নাম-পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্র জানায়, মাশিকাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানি করা হয় বলে সে বাড়িতে গিয়ে অভিভাকদের কাছে অভিযোগ করে। এক পর্যায়ে বিষয়টি নিয়ে স্কুল শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা প্রধান শিক্ষক মো. মোকতল হোসেনের বিচার দাবি করেন। বিষয়টি জানাজানি হলে শিক্ষার্থী ও অন্য অভিভাবকরা জড়ো হয়ে প্রধান শিক্ষককে স্কুলে অবরুদ্ধ করে রাখেন। এক পর্যায়ে বিক্ষুব্ধরা স্কুল মাঠে প্রধান শিক্ষকের মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেন।
খবর পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে না পারায় পরে জেলা সদর থেকে অথিরিক্ত পুলিশ মোতায়ন করা হয়। এরপর পরিস্থতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ফাঁকা গুলি ছোড়ে। এ সময় পুলিশকে লক্ষ্য করে বিক্ষুব্ধরাও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। এতে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকসহ অন্তত ১২ জন আহত হন। পরে রাত পৌনে ৯ টায় কুমিল্লা পুলিশ সুপার আব্দুল মান্নান এসে বিক্ষুব্ধ জনতাকে ছত্রভঙ্গ করে প্রধান শিক্ষককে উদ্ধার করেন।
অভিযোগের বিষয়ে প্রধান শিক্ষক মো. মোকতল হোসেন বলেন, আজ যে ঘটনা ঘটেছে এটি একটি চক্রান্ত। আমি এর চেয়ে বেশি কিছু বলতে চাই না।
দেবীদ্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কমল কৃষ্ণ ধর বলেন, শিক্ষার্থীরা প্রধান শিক্ষকের অপসারণ ও শাস্তির দাবিতে তাকে দীর্ঘ সময় ধরে অবরুদ্ধ করে রাখে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। রাত ৯টার দিকে প্রধান শিক্ষক মো. মোকতল হোসেনকে উদ্ধার করা হয়। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।