নির্বাচন কমিশন (ইসি) আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার দুই দিন পর থেকেই পুরোদমে নির্বাচনী প্রস্তুতি শুরু করেছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ।
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রথম বৈঠকে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, দলের যেসব নেতা সংসদ সদস্য হতে চান, তাদের অবশ্যই দল যাকে মনোনয়ন দেবে, তাকে সমর্থন করতে হবে।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার তেজগাঁওয়ে আওয়ামী লীগের ঢাকা জেলা কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সভায় দলটির সভানেত্রী তার সহকর্মীদের ভোটার উপস্থিতি বাড়াতে যা যা করা দরকার, তা করার নির্দেশ দেন।
স্টিয়ারিং কমিটির চেয়ারম্যান শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগ নেতাদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে শৃঙ্খলা বজায় রাখার আহ্বান জানান।
নির্বাচনের প্রস্তুতির জন্য আওয়ামী লীগ ১৫টি উপ-কমিটি গঠন করেছে এবং দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফর উল্লাহকে স্টিয়ারিং কমিটির কো-চেয়ারম্যান করা হয়েছে।
গত তিনটি সাধারণ নির্বাচনের সময় স্টিয়ারিং কমিটির কো-চেয়ারম্যান ছিলেন সাবেক আমলা এইচটি ইমাম।
শেখ হাসিনা আজ বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের প্রধান কার্যালয় থেকে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করবেন এবং আনুষ্ঠানিকভাবে মনোনয়নপত্র বিক্রির উদ্বোধন করবেন।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার প্রায় চূড়ান্ত।
সূত্র আরও জানায়, আওয়ামী লীগ ১৪ দলীয় জোটের শরিকদের সঙ্গে বৈঠকে বসবে এবং আওয়ামী লীগের শরিকরা কে, কয়টি আসন পাবে, তা নিয়ে আলোচনা করবে।
আওয়ামী লীগের শরিকরা ১৮টি আসন পাওয়ার বিষয়ে সমঝোতায় আসতে পারে। তবে শুরুতে তারা আরও বেশি আসন চাইবে। বর্তমানে সংসদে আওয়ামী লীগের শরিক দলের আটজন প্রতিনিধি রয়েছেন।
আওয়ামী লীগের প্রধান জোট ওয়ার্কার্স পার্টির নেতারা গতকাল দলটির নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে আসন ভাগাভাগির বিষয়টি যত দ্রুত সম্ভব নিষ্পত্তির আহ্বান জানান।
সূচনা বক্তব্যে শেখ হাসিনা বিএনপিসহ অন্যান্য দলকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াত মানুষ হত্যা করে, অগ্নিসংযোগের মাধ্যমে সম্পদের ক্ষতি সাধন করে এবং গাড়িতে আগুন দিয়ে অপরাধ করেছে। আমরা চাই তারা তাদের অপরাধের জন্য জাতির কাছে ক্ষমা চাক এবং তারপর দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুক।
‘সবার (নির্বাচনে) অংশগ্রহণ করা উচিত। দরজা সবার জন্য উন্মুক্ত’, বলেন তিনি।
অগ্নিসংযোগ উপেক্ষা করে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করায় তিনি নির্বাচন কমিশনকে ধন্যবাদ জানান।
ভোট জনগণের সাংবিধানিক অধিকার উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, 'যাদের সাহস আছে, তারাই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে। জনসমর্থন পেলে তারা ভোট পাবে। জনগণের ভোটে নির্বাচিত দলই সরকার গঠন করবে।'
‘আমাদের লক্ষ্য সবসময়ই জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা। নতুন সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত হবে, অস্ত্র ব্যবহার করে নয়, রাতের অন্ধকারে নয়’, বলেন তিনি।
বিএনপি ও তার মিত্ররা নির্বাচন থামাতে পারবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, অগ্নিসংযোগকারীদের ক্ষমা করা হবে না।
এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, মনোনয়নপ্রত্যাশীরা নিজেরা বা তাদের প্রতিনিধিরা ২১ নভেম্বর বিকেল ৪টার মধ্যে ব্যক্তিগতভাবে আবেদনপত্র সংগ্রহ ও জমা দিতে পারবেন। অনলাইনে নির্দিষ্ট ঠিকানায় (nomination.albd.org) বা স্মার্ট নমিনেশন অ্যাপের মাধ্যমেও তা করা যাবে।