বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক বলেছেন, ‘জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার বিপ্লবে যে বিজয় হয়েছে তা আমাদের ধরে রাখতে হবে। দেশে সাম্প্রদায়িকতাসহ কোনও ধরনের সহিংসতা করা যাবে না। আমাদের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রেখে চলতে হবে। বৈষম্যহীন একটি সমাজ গড়তে সব সম্প্রদায়ের মানুষকে আমাদেরই নিরাপত্তা দিতে হবে। তাই সহিংসতা কিংবা দেশবিরোধী সব ষড়যন্ত্রকে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিহত করতে হবে।’
শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে গাইবান্ধা জেলাশহরের ইসলামিয়া হাই স্কুল মাঠে অনুষ্ঠিত গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, শাপলা চত্বরে নিহত ও আহতদের স্মরণে দোয়া এবং নৈরাজ্যবাদবিরোধী এই গণসমাবেশের আয়োজন করে খেলাফত মজলিস গাইবান্ধা জেলা শাখা।
সমাবেশে মামুনুল হক বলেন, ‘শেখ হাসিনা ৫০ বছর রাজনীতি করেছেন, কিন্তু তার রাজনীতি ছিল প্রতিশোধ, বিভাজন আর মুক্তিযুদ্ধের নামে ব্যবসার রাজনীতি। অথচ শেখ হাসিনার পরিবারের কোনও সদস্য মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ কিংবা শাহাদাত বরণ করেননি। কিন্তু তারপরেও শেখ হাসিনা মুক্তিযুদ্ধকে পুঁজি করে বাংলাদেশকে বিভক্ত করেছেন। তিনি যখন-তখন যাকে ইচ্ছে তাকে রাজাকার বানিয়ে দেশটাকে ধ্বংসের পাঁয়তারা করেছিলেন।’
তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনা বলেছিলেন, “শেখ হাসিনা পালায় না।” অথচ ছাত্র-জনতার বিপ্লবের মুখে গোটা দল ও নেতা-অনুসারীদের হুমকির মুখে ফেলে স্বার্থপরের মতো নিজেকে আর বোনকে নিয়ে সব লাগেজ ভর্তি করে দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছেন।
‘শেখ হাসিনা দেশকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে গেছেন। খুন, গুম ও হত্যাসহ দেশটাকে একটা মৃত্যুকূপে পরিণত করেছিলেন। বিভিন্ন দেশে থেকে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে প্রবাসীরা বাংলাদেশে রেমিট্যান্স টাকা পাঠান। কিন্তু সেই রেমিট্যান্সের লাখ লাখ কোটি টাকা পাচার করে শেখ হাসিনা বাংলাদেশের অর্থনীতির ভিত নষ্ট করেছেন।’
গণসমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনটির গাইবান্ধা জেলা কমিটির আহ্বায়ক আলহাজ মুফতি ইউসুফ কাসেমী। এতে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন– খেলাফত মজলিসের যুগ্ম আহ্বায়ক জালালুদ্দীন আহমেদ, মাওলানা আতাউল্লাহ আমীন, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা এনামুল হক মুসা ও সহ-বায়তুলমাল সম্পাদক মাওলানা ফজলুর রহমান।
এ ছাড়া গণসমাবেশে খেলাফত মজলিসের জেলা-উপজেলাসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা বক্তব্য দেন।
এদিকে, সকাল থেকেই বিভিন্ন উপজেলার নেতাকর্মী এবং বিভিন্ন পেশার হাজার-হাজার মানুষ দলে দলে যোগ দেন সমাবেশে।