জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের কোনো অর্থই আত্মসাৎ হয়নি, জানাল দুদক

বিশেষ সংবাদদাতা
  ১১ নভেম্বর ২০২৪, ০০:৫১

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় হাইকোর্টের দেওয়া দশ বছরের কারাদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার করা লিভ টু আপিলের (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) ওপর শুনানি শেষ হয়েছে। আগামীকাল সোমবার আদেশের জন্য দিন রেখেছেন আদালত।

আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বেঞ্চে আজ রোববার উভয়পক্ষের শুনানি শেষে এ তারিখ রাখেন আদালত। এদিন আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল ও ব্যারিস্টার কায়সার কামাল প্রমুখ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। দুদকের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আসিফ হাসান।

এ দিন শুনানিতে দুদকের আইনজীবী আসিফ হাসান বলেন, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় কোনো অর্থ আত্মসাৎ হয়নি। তিনি বলেন, এক অ্যাকাউন্ট থেকে আরেক অ্যাকাউন্টে অর্থ গেলেও এখানে আত্মসাতের কোনো ঘটনাই ঘটেনি। তবে সুদে আসলে অ্যাকাউন্টেই টাকাটা জমা আছে। কোন টাকা ব্যয় হয়নি। দুদক আইনজীবী মামলায় এজাহার, অভিযোগপত্র ও সাক্ষ্যের অংশ তুলে ধরেন। তিনি মামলার নথিপত্র থেকে খালেদা জিয়া এ মামলার অভিযোগের সাথে সম্পৃক্ত নন এমন উপাদান পেশ করেন। পরে আপিল বিভাগ সাজার বিরুদ্ধে খালেদা জিয়া আপিলের অনুমতি পাবেন কিনা সোমবার আদেশের দিন ধার্য করেন।

এর আগে গত ৪ নভেম্বর খালেদা জিয়ার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে দুটি লিভ টু আপিলের ওপর শুনানির জন্য ১০ নভেম্বর দিন ঠিক করেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত।  ২০১৯ সালের ১৪ মার্চ আপিল বিভাগে দুটি লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করেছিলেন খালেদা জিয়া।

২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি বকশীবাজারে আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে স্থাপিত ঢাকার ৫ নম্বর বিশেষ জজ আদালত অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়ার পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন।

একই সঙ্গে খালেদার ছেলে ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান, মাগুরার সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও মমিনুর রহমানকে ১০ বছর করে কারাদণ্ড দেন আদালত। পরে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় ওই বছরের ২০ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়া আপিল করেন। একই বছরের ২৮ মার্চ খালেদার সাজা বৃদ্ধি চেয়ে দুদকের করা আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে একই বছরের ৩০ অক্টোবর হাইকোর্ট খালেদা জিয়ার সাজা পাঁচ বছর থেকে বাড়িয়ে ১০ বছর করেন। যদিও এই মামলায় খালেদা জিয়ার দণ্ড মওকুফ করেছিলেন রাষ্ট্রপতি।

এ বিষয়ে খালেদা জিয়ার আইনজীবীদের দাবি, বিএনপি চেয়ারপারসনের দণ্ড মওকুফ করা হয়েছে। তারপরও আপিল শুনানি কেন? আমরা বলেছি, তিনি (খালেদা জিয়া) আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। রাষ্ট্রপতি মওকুফ করেছেন। সেখানে ক্ষমার কথা আছে। খালেদা জিয়া ক্ষমার প্রতি বিশ্বাসী নন। তিনি অপরাধ করেননি। তিনি ক্ষমাও চাননি। তাই এটা আইনগতভাবে মোকাবিলা করতে আইনজীবীদের নির্দেশ দিয়েছেন।